Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN) বৃত্তান্ত :: যে কারনে আমাদের প্রত্যেকের VPN ব্যবহার করা উচিত! অ্যান্ড্রোয়েড এবং কম্পিউটার ডিভাইসের জন্য এক্সক্লুসিভ মেগাটিউন!

————————–— بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ————————–—
সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি, সবাইকে আন্তরিক সালাম শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি অ্যান্ড্রোয়েড এবং কম্পিউটার ডিভাইসে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক তথা VPN সম্পর্কিত আমার এক্সক্লুসিভ মেগাটিউন।
ইন্টারনেট ব্রাউজ করার সময় আমাদের মনে একটা ভীতি থাকে। মনে হয় কেউ আমাদের উপর স্পাইগিরি করছে, সরকার নজরদারী করছে কিংবা যেকোন সময় হ্যাক হয়ে যেতে পারে আমাদের গোপনীয় সব তথ্য। মোটামুটি আমাদের দেশের অনেক কম্পিউটার ব্যবহারকারী এই বিষয়গুলো নিয়েই সন্ত্রস্ত থাকে বিশেষ করে যারা উপর মহলে থাকে তাদের ভীতিটা দেখার মতো। তারা ভাবে এই বুঝি স্কাইপ কথোপকথন ফাঁস হয়ে গেলো। আপনি যে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছেন সেটা কতোটুকু সিকিউর সে সম্পর্কে হয়তো আপনি পুরোপুরি নিশ্চিত না। কারও ফ্রি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক দেখলেন আর চম্পট দিয়ে ঢুকে গেলেন সেই নেটওয়ার্কে। সচরাচর বাঙ্গালী প্রথমে ফেসবুকে ঢুকবে, পাসওয়ার্ড দিবে। কোন আর্থিক লেনদেনের সাইটে গেলে ক্রেডিট কার্ড ইনফোরমেশন প্রোভাইট করবে ইত্যাদি ইত্যাদি। পরে দেখা গেলো সেই তথ্যগুলো খুব সহজেই হ্যাক হয়ে গেছে। এই সমস্ত ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকতেই ব্যবহার করতে হবে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক। যেখানে একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সব ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদে থাকবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সে পাবে অ্যানোনিমাসলি ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ। আজকের টিউন শেষে আপনারা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক এবং কেন এটা ব্যবহার করতে হবে এ ব্যাপারে ব্স্তিারিত তথ্য জানতে পারবেন।

ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক তথা VPN কী?

VPN বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক হলো কোন পাবলিক নেটওয়ার্কের মধ্যে একটি প্রাইভেট নেটওয়ার্ক যা একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে সম্পূর্ণ সিকিউরিটি মেইনটেইন করে ডাটা আদান প্রদানে সাহায্য করে। তাছাড়া কান্ট্রি রেসট্রিকটেড ওয়েব সাইট, তুলনামূলক ভাবে ঝুকিপূর্ণ ওয়েব সাইট, ব্লক করে দেওয়া ইন্টারনেট কন্টেন্ট ইত্যাদি দেখার জন্যও ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক কার্যকর। যদিও কিছু কিছু দেশে এরকম VPN ব্যবহারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি আছে তবে আমাদের দেশের জন্য কোন সমস্যা না।

যে কারনে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করবেন সেটা নিচে বিস্তারিত জানাবো। কিন্তু তার আগে জেনে নিন কীভাবে তৈরী করবেন ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক। এ কাজের জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি ভালো মানের VPN সফটওয়্যার। ফ্রিতে এবং টাকার বিনিময়ে ভালো মানের VPN সফটওয়্যার পাওয়া যায়। নিচের ডাউনলোড লিঙ্কগুলোতে দুটি ফ্রিওয়ার এবং একটি প্রিমিয়াম VPN সফটওয়্যারের ডাউনলোড লিঙ্ক দিলাম। ডাউনলোড শেষে ইন্টস্টল করলেই ব্যবহার করতে পারবেন। অফিশিয়াল সাইট হতে ব্যবহারবিধি দেখেও নিতে পারেন। যদিও তা প্রয়োজন হবে বলে মনে হয় না।

ডাউনলোড VPN সফটওয়্যার (উইন্ডোজ এবং অ্যান্ড্রোয়েড)

  • এদের মাঝে প্রথম দুইটা সফটওয়্যার ফ্রি ভার্সন। এগুলো শুধুমাত্র ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন। ডাউনলোড এর জন্য সফটওয়্যারের অফিশিয়াল ডাউনলোড লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে আপনার অ্যান্ড্রোয়েড, উইন্ডোজ, iOS কিংবা অন্য অপারেটিং এর জন্য প্রয়োজনীয় ভার্সনটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। কিন্তু শেষের সফটওয়্যারটি অর্থাৎ Hotspot Shield Elite যেহেতু প্রিমিয়াম তাই এর জন্য থার্ড পার্টি ওয়েব সাইট এর লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে। নিচের ডাউনলোড লিঙ্ক থেকে শুধুমাত্র সফটওয়্যারটির উইন্ডোজ ভার্সন ডাউনলোড করতে পারবেন। অ্যান্ড্রোয়েড ফোন এর Hotspot Shield  ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন

কেন ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN) ব্যবহার করবেন?

ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক সম্পর্কে এতোক্ষণে মোটামুটি একটি ওভারভিউ দিতে পেরেছি মনে হয়। যারা এ ব্যাপারে আগে জানতেন না তাদের মনে সামান্য হলেও সুন্দর একটি ধারনা তৈরী হয়েছে নিশ্চয়। এবার তাহলে চলুন ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক এর সুবিধাগুলো জেনে নেই। নাহলে কাউকে তো বলতে পারবেন না যে, কেন আপনি VPN ব্যবহার করছেন। তাছাড়া নিজে কী করছেন, কেন করছেন এগুলোও তো জানতে হবে, তাই না?

অন্য দেশের সংরক্ষিত ওয়েব সাইট ভিজিট করতে

  • এরকম অনেক ওয়েব সাইট আছে যেগুলো অন্য দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ভিজিট করতে পারে না। কিন্তু VPN ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই ঐ ওয়েব সাইটগুলো ভিজিট করতে পারবেন। তাছাড়া কিছু কিছু ইন্টারনেট সুবিধা বিশেষ কিছু দেশের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। যেমন ইন্দোনেশিয়ানদের জন্য ফেসবুকে সিঙ্গেল নাম ব্যবহার করার সিস্টেম আছে। তাই VPN দিয়ে ইন্দোনেশিয়ার আইপি ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই বাংলাদেশে বসে সেই সুবিধাটা পাবেন।

যেকোন ব্লকড কন্টেন্ট ফ্রি ভাবে দেখতে

  • ইন্টারনেটে এমন অনেক কন্টেন্ট আছে যেগুলো প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য অথবা বয়স ভিত্তিক ব্লক করা থাকে। কিংবা সেটা যদি কোন সংগঠনের ওয়েব সাইট হয় তাহলে কর্মীদের পদবী কেন্দ্রিক কন্টেন্টে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি VPN ব্যহারে সেই সব ব্লক কন্টেন্ট অ্যাক্সেস করতে পারবেন। একটা অনুরোধ, বয়স ভিত্তিক কন্টেন্টগুলোর জন্য ভিপিএন সফটওয়্যারের অপপ্রয়োগ করবেন না প্লিজ।

যেকোন পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক নিরাপদে ব্যবহার করতে

  • কোন পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান প্রদানের জন্য নিরাপদ না। এসব নেটওয়ার্কে সব সময় ডাটা হ্যাক হওয়ার একটা ভয় থাকে। কিন্তু VPN ব্যবহার করে যেকোন পাবলিক নেটওয়ার্কের মাঝে একটি প্রাইভেট নেটওয়ার্ক তৈরী করা যায়। এর ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান প্রদানে শতভাগ নিরাপদ থাকতে পারবে।

ব্যক্তিগত ফাইল নিরাপদ আদান প্রদান করতে

  • আপনি হয়তো জানেন ইন্টারনেটে যে সকল ফাইল বা তথ্য আদান প্রদান করা হয় সেগুলোর উপর তদারকি করা যায়। আপনি হয়তো এমন কোন ফাইল কাউকে পাঠাতে চাচ্ছেন কিংবা ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করতে চাচ্ছেন যেগুলো ফাঁস হয়ে গেলে চরম বিপদে পড়তে হবে। এমন অবস্থায় VPN ব্যবহার করে নিরাপদে উক্ত ফাইল সবার অগোচরে ডাউনলোড কিংবা আপলোড করা যাবে।

ব্রাউজিং কখনো লগড হবে না

  • মনে করুন, আপনি আদালত থেকে অভিযুক্ত হলেন। কারন হিসাবে উল্লেখ করা হলো, আপনি ইন্টারনেটে কোকেন নিয়ে ঘাটাঘাটি করেছেন কিংবা অর্ডার করেছেন। আপনি হয়তো আপনার কেমিস্ট্রি প্রজেক্টের জন্য কাজটি করেছেন তারপরও তো এটা লিগ্যাল না। আপনার পিসিতে যদি VPN তৈরী করা থাকে তাহলে আপনার ব্রাউজার হিস্ট্রিগুলো সম্পূর্ণ আনট্রেসেবল অবস্থায় থাকবে। এবং এমতাবস্থায় নিজেকে খুব সহজেই নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন। এ জাতীয় যাবতীয় সিরিয়াস বিষয় থেকে VPN আপনাকে রক্ষা করতে পারবে।

প্রাইভেসি রক্ষনে VPN শতভাগ কার্যকর

  • গুগল মামু এমন একটা জিনিস, যার হাত থেকে আপনি কোন ভাবেই পালাতে পারবেন না। আপনি কী করছেন, কীভাবে করছেন, আপনার ইন্টারেস্ট কী এসব কিছুই গুগল খুব ভালো করে জানে। আপনি যদি না চান, আপনার তথ্যগুলো কোথাও সঞ্চিত থাকুক তাহলে আপনার জন্য সর্বোত্তম সমাধান হলে VPN ব্যবহার করা। VPN ব্যবহারে আপনি থাকবেন সম্পূর্ণ অ্যানোনিমাস।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছিলো। কোন ভাবেই হল কিংবা ডিপার্টমেন্টের এর ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফেসবুক ব্যবহার করা যাচ্ছিলো না। এমতাবস্থায় আমি এবং আমার এক বন্ধু টিউনার সজিব মিলে VPN ব্যবহার করা শুরু করি। সেটাই ছিলো জীবনে প্রথম VPN ব্যবহার করা। আর এখন তো VPN ছাড়া চলেই না। কারন একমাত্র VPN ব্যবহারেই কোথাও আমার হারিয়ে যেতে নেই মানা!

শেষ কথা

টিউনটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অথবা বুঝতে যদি কোন রকম সমস্যা হয় তাহলে আমাকে টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। কারন আপনাদের যেকোন মতামত আমাকে সংশোধিত হতে এবং আরো ভালো মানের টিউন করতে উৎসাহিত করবে। আর টিউনটিকে মৌলিক মনে হলে এবং নির্বাচিত টিউন হওয়ার উপযুক্ত মনে হলে নির্বাচিত টিউন মনোনয়ন দিতে ভুলে যাবে না যেন। সর্বশেষ যে কথাটি বলবো, আসুন আমরা কপি পেস্ট করা বর্জন করি এবং অপরকেও কপি পেস্ট টিউন করতে নিরুৎসাহিত করি। সবার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে আগামী টিউনে।আপনাদের জন্য

Post a Comment

0 Comments